চিকিৎসা সেবায় রাজশাহী


উত্তরবঙ্গ স্বাস্থ্যসেবার প্রাণকেন্দ্র।

‎​রাজশাহী মহানগরী বাংলাদেশের উত্তর অঞ্চলের মানুষের জন্য শুধু শিক্ষাক্ষেত্রেই নয়, চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রেও প্রধান ভরসা এবং প্রাণকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এই শহরটি দীর্ঘকাল ধরে উত্তরবঙ্গের বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর উন্নত চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে। এখানে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে স্বাস্থ্যসেবার একটি শক্তিশালী কাঠামো গড়ে উঠেছে।‎



বাংলাদেশের রাজশাহী জেলা উত্তরাঞ্চলের একটি ঐতিহ্যবাহী শহর।এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শহর।

 এ শহরটি শুধুমাত্র শিক্ষা ও সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবেই নয়, বরং চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রেও অত্যন্ত অগ্রগামী অঞ্চল হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। এ অঞ্চলের ডাক্তার ও নার্সের সেবার মান অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

রাজশাহীর মানুষ সুস্বাস্থ্য ও উন্নত চিকিৎসা সেবার জন্য আজ দেশের জনপ্রিয় শ্রেষ্ঠ স্থান হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। 
শুধুমাত্র চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে রাজশাহী শহর বর্তমানে  উত্তরবঙ্গেই না, বরং পুরো বাংলাদেশের মানুষের কাছে আস্থার নাম। 
সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং স্বাস্থ্য সচেতনতা—সব মিলিয়ে রাজশাহী এখন একটি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্যনগরী।
যেটা আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়।
ইতিহাস 
এক শতাব্দী পূর্বেও  আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা  এতো উন্নত ছিলো না। অনেক মানুষ, অনেক বৃদ্ধ, অনেক শিশু বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন, বিনা চিকিৎসায় বা সু চিকিৎসার অভাবে। আধুনিক চিকিৎসা সেবা সূচনার একটি ইতিহাস আছে। নিম্নে বিস্তারিত দেওয়া হলো।
সৃষ্টির গল্পটি ঠিক এ রকম.....

‎রাজশাহীতে আধুনিক চিকিৎসা সেবার সূচনা হয়েছিল প্রায় এক শতাব্দী আগে। 
ব্রিটিশ পিরিয়ড এ কিছু মিশনারি ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান মানবসেবার জন্য চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করে। এর মধ্যে অন্যতম ছিল Christian Mission Hospital (CMH), যেটি আজও কার্যকর। আজও আমাদের সেবা প্রদান করে যাচ্ছে, নিরলস ভাবে। এটি আমাদের অহংকার।
আমাদের গর্ব।

‎‎পরবর্তীতে,‎​রাজশাহী চিকিৎসা সেবার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু হলো রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রামেক)। ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটি শুধু একটি হাসপাতাল নয়, এটি একটি ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।
‎​রামেক উত্তরবঙ্গের একটি অন্যতম বৃহত্তর সরকারি হাসপাতাল। এখানে বেডের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ১২০০ (পূর্বে ৮৬২ ছিল, সম্প্রতি বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চলছে)। এর বিশাল অবকাঠামোতে মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি ও শিশু বিভাগসহ ৫৭টিরও বেশি ওয়ার্ড ও বিভিন্ন বিশেষায়িত বিভাগ রয়েছে।
বিশেষায়িত সেবা: 
হাসপাতালটিতে কার্ডিওলজি, নিউক্লিয়ার মেডিসিন, বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট, আইসিইউ (ICU), সিসিইউ (CCU), সিটি স্ক্যান, এমআরআই এবং এন্ডোস্কপি-কলোনোস্কপির মতো গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষায়িত চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা আছে। 
এটি সাধারণত কম খরচে বা বিনামূল্যে সাধারণ জনগণের জন্য উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করে।
১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (RMC)।যা উত্তরাঞ্চলের চিকিৎসা ও শিক্ষা, 
 উভয় ক্ষেত্রেই নতুন দিগন্তের সূচনা করে। 
এই প্রতিষ্ঠান শুধু চিকিৎসা দেয় না, বরং দক্ষ চিকিৎসক ও নার্স তৈরি করে দেশের সেবায় নিয়োজিত করে। 
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বর্তমানে দেশের অন্যতম বড় সরকারি হাসপাতাল।
 যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করে।
মাত্র 10 টাকা টিকিট কেটেই চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়। এখানে সকল বিষয়েরই চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়। যেকোনো ইমার্জেন্সি চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ বেস্ট। 

রোগর চিকিৎসায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ,  


‎বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় রাজশাহী
‎রাজশাহীর চিকিৎসা ব্যবস্থা এখন বহুমাত্রিক ও অনেক আধুনিকতা লাভ করেছে।
 সরকারি-বেসরকারি উভয় খাতেই সেবা বিস্তৃত হয়েছে।সরকারি সেবার পাশাপাশি রাজশাহী শহরে বেশ কিছু মানসম্মত বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এসব প্রতিষ্ঠান সরকারি হাসপাতালের উপর চাপ কমাতে এবং দ্রুত ও আধুনিক সুবিধা দিতে সহায়ক।
উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠান সমূহ
 ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, রাজশাহী ডায়াবেটিক এসোসিয়েশন জেনারেল হাসপাতাল, বারিন্দ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, এবং অন্যান্য বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার যেমন পপুলার, ল্যাব-এইড, ইবনে সিনা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

​আধুনিক সুযোগ-সুবিধা: 
বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণত অপেক্ষাকৃত দ্রুত সেবা, ব্যক্তিগত কক্ষ এবং কিছু বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা রয়েছে।
 এখানে প্রায় ৫০টিরও বেশি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে, পাশাপাশি সরকারি পর্যায়ে একাধিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, উপজেলা হাসপাতাল, এবং মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রয়েছে। যা সফলভাবে কাজ করে চলেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: 
রাজশাহী জেলার প্রতিটি উপজেলায় সরকার পরিচালিত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স রয়েছে।
যেখানে থেকে স্থানীয় জনগণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারে। প্রাথমিক স্বাস্থ সেবা নেয়ার পরে প্রয়োজন হলে, তারা শহরে পাঠিয়ে দেয়।
‎বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা
‎রাজশাহীতে বেসরকারি পর্যায়েও বেশ কিছু আধুনিক হাসপাতাল রয়েছে। এর মধ্যে

‎পপুলার ডায়গোনেস্টিক
‎ইসলামী ব্যাঙ্ক হাসপাতাল
‎‎এপলো হাসপাতাল
জমজম ইসলামী হাসপাতাল
ইবনে সিনা হাসপাতাল
রয়েল হাসপাতাল ও ডায়গোনেস্টিক সেন্টার
‎মডার্ন হাসপাতাল
ইত্যাদি।
এসব প্রতিষ্ঠান দক্ষতার সাথে আমাদের সেবা প্রদান করে চলেছে।
এদের রয়েছে আধুনিক যন্ত্রপাতি, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও ২৪ ঘণ্টা জরুরি সেবা সুবিধা রয়েছে।
 অনেক হাসপাতালে ডায়ালাইসিস, সিটি স্ক্যান, আল্ট্রাসনোগ্রাম, আইসিইউ এবং কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটের মতো উন্নত সুবিধাও পাওয়া যায়।যা আমাদের জন্য অনেক উপকারী। এসব ক্লিনিক গুলো সাধারণত ব্যয়বহুল হয়ে থাকে। তাই চিকিৎসা গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই আমাদের ব্যবহুলতা সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।
‎স্বাস্থ্যসেবার বৈচিত্র্যতা ও অন্যান্য সুবিধাসমূহ

​রাজশাহী শহরের চিকিৎসা সেবার পরিধি অনেক বিস্তৃত।
নিম্নে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
​বহুমুখী বিশেষত্ব: 
এখানে গাইনি ও বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, অর্থোপেডিক সার্জন এবং শিশু বিশেষজ্ঞদের মতো বিভিন্ন বিশেষায়িত ডাক্তারদের পরামর্শ এবং চিকিৎসা পাওয়া যায়।
ডায়াগনস্টিক সেবা: 
সিটি স্ক্যান, এমআরআই, বিভিন্ন ধরনের প্যাথলজিক্যাল টেস্ট সহ উন্নত ডায়াগনস্টিক সুবিধা রয়েছে।

চিকিৎসা শিক্ষা ও প্রশিক্ষনে রাজশাহী
‎রাজশাহী চিকিৎসা শিক্ষার অন্যতম কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত। এখানে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়ন ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।
‎রাজশাহী মেডিকেল কলেজ থেকে প্রতিবছর শতাধিক ছাত্রছাত্রী এমবিবিএস সম্পন্ন করে।
রাজশাহী নার্সিং কলেজ দক্ষ নার্স তৈরি করছে।
‎বিএমএ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং রাজশাহী টেকনিক্যাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট থেকে টেকনোলজিস্ট ও প্যারামেডিক কর্মী তৈরি হয়।
‎চিকিৎসা শিক্ষায় গবেষণা কার্যক্রমও গুরুত্ব পাচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী মেডিকেল রিসার্চে যুক্ত হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে রাজশাহীর চিকিৎসা উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।
অর্থাৎ,
‎রাজশাহী এখন শুধু সাধারণ চিকিৎসায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং বিশেষায়িত সেবার ক্ষেত্রেও অগ্রগামী।
‎‎যেমন: 
কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট (CCU) চিকিৎসা সেবায় গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
‎কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপির মাধ্যমে ক্যান্সার রোগীদের উন্নত চিকিৎসা দেওয়া হয়।
‎মস্তিষ্ক ও মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত চিকিৎসায় উন্নতি ঘটেছে।
‎রাজশাহীর ডায়াবেটিক হাসপাতাল দীর্ঘদিন ধরে জনগণের সেবা দিয়ে আসছে।
‎রাজশাহী চক্ষু ইনস্টিটিউট দৃষ্টিহীন ও দৃষ্টি সমস্যাগ্রস্তদের সেবা প্রদান করে আসছে, বহুদিন থেকে ই।
চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

‎​রাজশাহীর স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো উত্তরবঙ্গের জন্য আশীর্বাদ হলেও কিছু কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে।
 যেমন, 
‎ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব: 
প্রত্যন্ত এলাকায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পাওয়া যায় না।তাই প্রায়ই আমাদের সংকট এ পড়তে হয়।
‎ যন্ত্রপাতির ঘাটতি: অনেক উন্নত চিকিৎসার যন্ত্রপাতি এখনো অপ্রতুল।তাই ইমারজীন্সি মুহূর্তে বিপদে পড়তে হয়।
‎‎বেডের অভাব : 
হাসপাতালে রোগীর তুলনায় বেড সংখ্যা কম।তাই খুবই সমস্যা র মধ্যে পড়তে হয়। যা খুবই কষ্ট দায়ক।
বেসরকারি চিকিৎসার ব্যবহুলতা: 
আমাদের দেশের প্রায় মানুষই দরিদ্র সীমার নিচে বসবাস করে। তাই দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য এটি একটি অনেক বড় সমস্যা।
‎‎সচেতনতার অভাব:
সচেতনতার অভাবে, অনেক মানুষই রোগাক্রান্ত হয়। তারা প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা সম্পর্কে অবহিত নয়।এবং নির্দেশনাওমেনে চলে না। এটা অনেক বড় সমস্যা।
ভবিষৎ সম্ভবনায় রাজশাহী.....
‎রাজশাহীর চিকিৎসা সেবা উন্নয়নে সরকার ও বেসরকারি খাত উভয়ই কাজ করছে।
‎‎রাজশাহী মেডিকেল কলেজে নতুন ভবন ও আধুনিক ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে।
‎‎টেলিমেডিসিন সেবা চালু করা হচ্ছে, যাতে দূরবর্তী এলাকার মানুষও অনলাইনে চিকিৎসা পরামর্শ পায়।
‎‎বেসরকারি খাতে বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে নতুন হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠছে।
‎‎স্বাস্থ্যসেবা ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে দ্রুত ও নির্ভুল তথ্য ব্যবস্থাপনা সম্ভব হচ্ছে।
রাজশাহীর চিকিৎসা ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় অর্জন হলো সাধারণ মানুষের কাছে সেবার সহজলভ্যতা।
‎আগে যেখানে ছোটখাটো অসুখে মানুষকে ঢাকায় যেতে হতো, এখন রাজশাহীতেই অধিকাংশ উন্নত চিকিৎসা পাওয়া যায়।
‎শহর ও গ্রামে টিকাদান কর্মসূচি, পরিবার পরিকল্পনা, মাতৃত্বকালীন সেবা, নবজাতক পরিচর্যা এবং বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রকল্প কার্যকরভাবে চলছে।
‎সিটি কর্পোরেশন ও বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন নিয়মিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন করছে।

 স্বাস্থ্য সচেতনতা ও জনগণের ভূমিকা
রাজশাহীর মানুষ এখন ধীরে ধীরে স্বাস্থ্য সচেতন হচ্ছে।
‎বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও চিকিৎসক সমাজ নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্যবিষয়ক সেমিনার, ক্যাম্প ও প্রচারণা চালাচ্ছে।
‎পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জীবনযাপন, সুষম খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম ও সময়মতো চিকিৎসা গ্রহণ করলে অনেক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
‎এই সচেতনতার প্রসার আগামীতে রাজশাহীর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে।


সবমিলিয়ে, রাজশাহী শহর বর্তমানে উত্তরবঙ্গের প্রায় দুই কোটি মানুষের জন্য উন্নত চিকিৎসার এক অবিচ্ছেদ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। 
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানের শক্ত ভিত্তি এবং বেসরকারি খাতের ক্রমবর্ধমান অংশগ্রহণে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য উন্নত, সুলভ এবং আধুনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার পথে এগিয়ে চলেছে।
‎তাই ‎রাজশাহী এখন চিকিৎসা সেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
‎একসময় যেখানে মানুষকে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নিতে হতো, আজ রাজশাহী নিজেই উত্তরবঙ্গের চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সরকারি-বেসরকারি সমন্বয়ে, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, দক্ষ চিকিৎসক ও জনগণের সচেতনতার ফলে রাজশাহী স্বাস্থ্যখাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
‎যদি অবকাঠামো উন্নয়ন, ডাক্তার সংখ্যা বৃদ্ধি, যন্ত্রপাতি আধুনিকীকরণ ও স্বাস্থ্যশিক্ষা বিস্তার অব্যাহত থাকে, তবে রাজশাহী হবে পুরো উত্তরবঙ্গের নয়, বরং বাংলাদেশের একটি “হেলথ হাব”।
‎রাজশাহী আজ শুধু আমের শহর নয় —
‎এটি মানবতার শহর, যেখানে চিকিৎসা সেবাই মানবতার সবচেয়ে বড় দান।
‎‎রাজশাহীর চিকিৎসা ব্যবস্থার এই অগ্রগতি শুধু শহরের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং এর প্রভাব আশপাশের জেলাগুলোতেও পড়েছে। এখানকার উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যসেবা পেতে আশেপাশের জেলা থেকেও অনেক রোগী রাজশাহীতে আসেন। বিশেষত, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ও বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী এখন একটি নির্ভরযোগ্য স্থান হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এছাড়া, রাজশাহীর চিকিৎসা খাতে গবেষণা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। গবেষণা কার্যক্রমের মাধ্যমে নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি ও ওষুধের উন্নয়ন করা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করবে।
‎স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হচ্ছে, যাতে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সচেতন হতে পারে। এই সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে রোগ প্রতিরোধ ও সুস্থ জীবনযাপনের ক্ষেত্রে জনগণের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রাজশাহীর এই অগ্রগতি ধরে রাখতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয় আরও জোরদার করা প্রয়োজন। উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নের মাধ্যমে রাজশাহী ভবিষ্যতে দেশের স্বাস্থ্যখাতে আরও বড় ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url